চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে কাঁদলেন প্রধানমন্ত্রী, কাঁদলেন শ্রমিকরাও
নিজস্ব প্রতিবেদক, কমলগঞ্জ :: চা শ্রমিকদের কথা শুনে আবেগে কেঁদে ফেললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনেও কাঁদেন চা শ্রমিকরা। শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের পাত্রখোলা বাগানের চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বক্তব্যে চা শ্রমিক রীতা পানিকা প্রথমে চা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানান। তিনি মজুরি বৃদ্ধি করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
এ সময় অশ্রুসিক্ত নয়নে রীতা পানিকা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমরা সব সময় আপনার কথা ভেবে এসেছি এবং ভেবে যাবো। আমরা জানি, আপনার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। সেই স্বাধীনতা নিয়ে আমরা বেঁচে আছি। আমরা চাই আপনার বাবার মতো আপনিও কোনোদিন আমাদের কাছ থেকে সরে যাবেন না। আপনি আমাদের কাছে চিরজীবি থাকবেন। আমরা চা শ্রমিকরা যে কষ্টে আছি সেটা আপনি দেখেছেন এজন্য আপনাকে কোটি কোটি ধন্যবাদ। আপনাকে আমাদের কমলগঞ্জ উপজেলায় এক কাপ চায়ের দাওয়াত দিচ্ছি। আপনি আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন। আপনাকে আমরা দেখছি, এটা যে আমাদের জন্য কতো আনন্দের সেটা মুখের ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এ সময় রীতা পানিকা কোনো ভুল-ক্রটি হলে ক্ষমা চান।
প্রধানমন্ত্রী আবেগে অশ্রুসিক্ত চোখে বলেন, আপনারা ক্ষমা চাইবেন কেনো। আপনারা যেটা করেছেন সেটা বাঁচার তাগিদে করেছেন। আমি সেটা বুঝি। এজন্য আগে আমি মালিকদের সঙ্গে বসেছি, এখন আপনাদের সঙ্গে বসলাম।
চা শ্রমিক সোনা মনি বলেন, আমি আপনার ওপর খুশি আছি। আগে ১২৯ টাকা পেতাম। এখন ১৭০ টাকা পাই মা। আমাদের কোনো অভাব নাই। আপনি সব করে দিয়েছেন। আপনি আমাদের একটা সুবিধা করিয়া দিবেন যাতে পেট ভরিয়া খেতে পারি। এ সময় তিনি বাগানের স্কুলগুলো সরকারি করার দাবি জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবা নাগরিকত্ব দিয়েছেন। আমি সবাইকে ঘর করে দেবো। ছেলেমেয়ে নিয়ে যাতে ভালোভাবে থাকতে পারেন সেটা করে দেবো। পরে প্রধানমন্ত্রী চা বাগানের ঐতিহাসিক ঝুমুর নাচ দেখেন এবং এর প্রশংসা করেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুশ শহীদ, মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ, জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া প্রমুখ।