বড়লেখায় মিথ্যা মামলায় জেল খাটানো ও হয়রানি করায় বাদীর অর্থদণ্ড!
নিজস্ব প্রতিবেদক :: নিরীহ ব্যক্তিদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটানো ও হয়রানির করার প্রমাণ পেয়ে আসামীদের খালাস দিয়ে বাদী দিলু মিয়ার বিরুদ্ধে অর্থদণ্ডের রায় দিয়েছেন মৌলভীবাজারের বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। রোববার (২৮ আগস্ট) দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে ব্যতিক্রমী এ রায় ঘোষণা করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জিয়াউল হক। বাদী উপজেলার বড়থল-নয়াগ্রামের মৃত রকিব আলীর ছেলে।
আদালত সূত্র জানায়, উপজেলার বড়থল-নয়াগ্রামের বাসিন্দা দিলু মিয়া পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই গ্রামের নিরীহ আব্দুল আজিজ, আব্দুল কাদির, আব্দুল আজিম ও আব্দুল করিমের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম, টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের অভিযোগে থানায় মামলা করেন। এ মামলায় প্রধান আসামী আব্দুল আজিজ ২১ দিন ও তিন নম্বর আসামী আব্দুল আজিম ৩দিন হাজতবাস করেন। অন্য আসামীরা আদালত থেকে জামিন নেন। প্রায় ৩ বছর ধরে আসামীরা আদালতে নিয়মিত হাজিরা দেয়াসহ আর্থিক ও মানসিক হয়রানির শিকার হন। স্বাক্ষ্যপ্রমাণে বর্ণিত কোনো অপরাধের অভিযোগ আদালতে প্রমাণ করতে পারেননি মামলার বাদী।
বিজ্ঞ আদালত মোট ১১ জন স্বাক্ষীর জবানবন্দী ও জেরা-বিশ্লেষণ করে সন্দেহাতীতভাবে নিশ্চিত হন মামলাটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক। আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয় যে, বাদী দিলু মিয়া পূর্ব থেকেই মাতাল ও উশৃঙ্ক্ষল প্রকৃতির লোক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে মামলা-মোকদ্দমা, স্থানীয় সালিশ-বৈঠক চলে আসছিলো। ঘটনার দিন, সময় ও স্থানে দিলু মিয়া মদ খেয়ে মাতলামি করতে করতে বাড়িতে প্রবেশ করে বিভিন্ন লোকজনের সাথে খারাপ আচরণ করেন। এমনকি পুরো পাড়া জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি-ধামকি দেয়ার একপর্যায়ে তার মা তাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তার বড়ভাই মিনহাজুর রহমান বলাই ফোন পেয়ে স্থানীয় বাজার থেকে গিয়ে মাতাল দিলুকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টার অংশ হিসেবে মেয়েদের পুরনো হিল জুতা দিয়ে মাথায় আঘাত করলে দিলুর মাথায় রক্তাক্ত জখম হয়। পূর্ব শত্রুতার জেরে সে উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় প্রত্যেক আসামীকে খালাস দিয়ে বাদীর বিরুদ্ধে আসামীদের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন বিজ্ঞ আদালত। বড়লেখা আদালতের বেঞ্চ সহকারী ইকরাম হোসেন বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছেন।