বন্যায় বীজতলায়ি পানি, বড়লেখায় বিকল্পভাবে ৪৮ বিঘা জমিতে রোপা আমনের চারা রোপণ
নিজস্ব প্রতিবেদক :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় গত জুন-জুলাইয়ের দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় উপজেলার নিম্নাঞ্চলের রোপা আমনের বীজতলা তৈরির জমি নিমজ্জিত থাকায় এবার ব্যাপক জমি অনাবাদি থাকার আশংকা দেখা দেয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপির পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনায় উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বিশেষ ব্যবস্থায় উপজেলার উঁচু এলাকার প্রায় ৪৮ বিঘা জমিতে বীজ বপন করেছে। আর এসব চারায় (হালি) প্রায় ১ হাজার বিঘা জমিতে রোপা আমন আবাদের সম্ভাবনা রয়েছে। বন্যার কারণে এই জমি অনাবাদি থাকার আশংকা ছিলো। কিন্তু প্রশাসনের আগাম তৎপরতায় এসব জমি আবাদের আওতায় নিয়ে আসায় ৫৭৬ মেট্টিক টন ধান উৎপাদন হবে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগ আশা করছে। গত ১৮ আগস্ট দুপুরে ইউএনও খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবল সরকার এবারের দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় উপজেলার কৃষির ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠার ব্যাপারে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোপাল দত্ত, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আহাদ, সাংবাদিক আব্দুর রব, লিটন শরীফ, তপন কুমার দাস, মস্তফা উদ্দিন প্রমুখ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবারের জুন-জুলাইয়ে বন্যায় উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ব্যাপক এলাকা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বর্ষণে তলিয়ে যায়। বিশেষ করে উপজেলার তালিমপুর, বর্ণি ও সুজানগর ইউনিয়নের কৃষি জমিতে রোপা আমনের বীজ বপনের কোনো জমি শুকনো পাওয়া যায়নি। পানি নামার পর ধান রোপণের মৌসুমও থাকছে না দেখে প্রান্তিক কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েন। ঠিক তখনই পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপির পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনায় উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ যৌথভাবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে বীজতলা তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করে। গত ৩১ জুলাই থেকে সেসব বীজতলায় বীজ বপন শুরু হয়। আগামী ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চারা রোপণ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কৃষিবিভাগ কাজ করছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী জানান, উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে ১২টি প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে ১৮ বিঘা জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির বীজ ও রাসায়নিক সার সহায়তায় আরও ২২টি প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন স্থানে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে বীজতলা করা হয়েছে। যেখানে লেট জাতের বিআর-২২ ও বিআর-২৩ ধানের বীজ বপন করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবল সরকার জানান, তিনি ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ স্থানীয় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে বীজতলা তৈরি করেছেন। দু’টি কর্মসূচির সহায়তায় ৪৮ বিঘা নাবী জাতের রোপা আমন বীজতলা করা হয়েছে, যার দ্বারা ৯৬০ বিঘা জমি রোপণ করা সম্ভব হবে। প্রতি বিঘায় গড় ফলন ০.৬ মেট্রিক টন হিসেবে ৯৬০ বিঘা জমিতে মোট ৫৭৬ মেট্টিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যার আনুমানিক বাজারমূল্য হবে ১ কোটি ৫৫ লাখ ৫২ হাজার টাকা।