বড়লেখায় ভয়াবহ বন্যা, ভাঙা সড়কে চলাচলে ভরসা বাঁশের সাঁকো
নিজস্ব প্রতিবেদক :: পাহাড়ি ঢলের পানিতে সড়কের ১০০ ফুটের বেশি অংশ সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। এতে ১টি চা বাগান ও ৩টি গ্রামের অন্তত ২৫ হাজার মানুষের সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙা অংশে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে সাময়িক চলাচলের ব্যবস্থা করেন। প্রায় এক মাস ধরে এ অবস্থায় উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ রক্ষা করছেন স্থানীয় মানুষজন।
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার বড়লেখা সদর ইউনিয়নের আরএইচডি বরইতলি-বড়লেখা জিসি ভায়া মুছেগুল–হিনাইনগর সড়কের দক্ষিণ হিনাইনগরে (বালিছড়া) সড়কে এ ভাঙনটি হয়েছে। সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সারা এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়লে সড়কটির এ অংশ পানির তোড়ে ভেসে যায়।
উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়সূত্র জানায়, গত ১৭ জুন ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় বড়লেখা সদর ইউনিয়নের আরএইচডি বরইতলি-বড়লেখা জিসি ভায়া মুছেগুল–হিনাইনগর সড়কের দক্ষিণ হিনাইনগরের বালিছড়া এলাকায় প্রায় ১৩০ ফুট সড়ক পানিতে ভেসে যায়। জায়গাটির পাশেই উজানের পানি নেমে যেতে একটি ছোট কালভার্ট আছে। কিন্তু কালভার্টটি পানি প্রবাহে বাঁধাপ্রাপ্ত হয়। এ সময় ঢলের পানিতে সড়ক ডুবে নিচের দিকে প্রবাহিত হতে থাকে। একপর্যায়ে পাহাড়ি ঢল কালভার্টের কাছে পাকা সড়কটির অংশ ধুয়েমুছে ভাসিয়ে নেয়। এতে এ এলাকার কেরামতনগর চা বাগান, মুছেগুল, হিনাইনগর ও কুতুবনগর এলাকার মানুষ উপজেলা সদরসহ বাইরের সঙ্গে সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এ সড়ক দিয়ে উপজেলা সদরের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও স্থানীয় বড়খলা মাদ্রাসা, মুছেগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হিনাইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আসা-যাওয়া করে। ভাঙনের অংশটি পড়েছে হিনাইনগর ও মুছেগুলের সংযোগস্থলে। সব ধরণের যান ভাঙনের অংশে এসে আটকে যাচ্ছে।
এদিকে পানি নামার কয়েক দিন পর সাময়িক চলাচলের সুবিধার্থে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গ্রামবাসী ভাঙনের অংশে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন। এই সাঁকোই এখন তাদের যোগাযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে অন্যতম ভরসা। নতুন করে স্থানটি সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত সাঁকোই চলাচলের একমাত্র উপায়।
হিনাইনগর গ্রামের বাসিন্দা ও বড়লেখা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুনেদ আহমদ জানান, ‘যুবসমাজসহ সবার সমন্বয়ে চলার উপযোগী একটা সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। এ সাঁকো দিয়েই চলাচল করছি সবাই।’
বড়লেখা উপজেলা প্রকৌশলী প্রীতম সিকদার জয় জানান, এ বছরের মধ্যেই এই ভাঙা অংশে একটি বড় কালভার্ট করে সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হবে। তবে রাস্তার পুরো কাজ আগামী বছরের আগে করা যাবে না। মাটি ভালো করে না বসলে পিচ টিকবে না।