ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্য করে দেড়মাস আত্মগোপন, সেই হিন্দু যুবকের ক্ষমা প্রার্থনা
নিজস্ব প্রতিবেদক :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ফেসবুক আইডিতে আপত্তিকর মন্তব্য করে প্রায় দেড়মাস আত্মগোপনে থাকা সেই হিন্দু যুবক কিংসু ঘোষ অবশেষে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
জানা গেছে, মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা:)-কে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যকারী ভারতের নূপুর শর্মাকে সমর্থন করে স্ট্যাটাস দিয়ে বড়লেখায় গত জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নতুন বিতর্ক উস্কে দিয়েছিলেন বড়লেখা সরকারি কলেজের সহকারি অধ্যাপক দিগেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ। আর ওই কলেজ শিক্ষকের মন্তব্যের পক্ষে নিজের ফেসবুক আইডিতে আরেকটি স্ট্যাটাস দিয়ে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত করেন বড়লেখার পানিধার এলাকার ননী গোপাল ঘোষের ছেলে কিংসু ঘোষ। মহানবী (সা:) এর অবমাননাকারী কলেজ শিক্ষক দিগেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ ও কিংসু ঘোষের বিতর্কিত মন্তব্যের পরই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় ওঠে। তখন থেকেই কলেজ শিক্ষক দিগেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ ও কিংসু ঘোষ আত্মগোপন করেন।
দীর্ঘ প্রায় দেড়মাস আত্মগোপনে থাকার পর বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য অবশেষে সোমবার (১৮ জুলাই) দুপুরে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছে সেই যুবক কিংসু ঘোষ। উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদের উপস্থিতিতে তার কার্যালয়ে প্রকাশ্যে কিংসু ঘোষ বলেন, গত ৯ জুন রাতে কলেজ শিক্ষক দিগেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথের একটি পোস্টে না বুঝে অজ্ঞতাবশত তিনি একটি কমেন্টস করেছিলেন, যা বড়লেখাসহ সারা বিশ্বের মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত হানে। এমন মন্তব্য করা তার জন্য মোটেও ঠিক হয়নি, তিনি তা বুঝতে পেরেছেন। অজ্ঞতাবশত এ ভুলের জন্য তিনি জনপ্রতিনিধি, আলেম সমাজ, সুশীল সমাজ ও মিডিয়ার সামনে এসে মুসলিম জাতি ও দেশবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না মর্মে প্রতিশ্রুতি দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তাজ উদ্দিন, আওয়ামীলীগ নেতা অধ্যক্ষ একেএম হেলাল উদ্দিন, বড়লেখা খাদিমুল কোরআন পরিষদের সভাপতি ও বড়লেখা বড় মসজিদের খতিব মুফতি রুহুল আমিন, উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা জাকির হোসেন, উপজেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি কাজী এনামুল হক, কিংসু ঘোষের বাবা ননী গোপাল ঘোষ, উপজেলা পূজা পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক গীতেশ রঞ্জন দাস, প্রচার সম্পাদক সুজিত দাস প্রমুখ।
উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ জানান, কিছু হিন্দু কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ কিংসু ঘোষের অবমাননাকর মন্তব্যের বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য তার সাথে যোগাযোগ করেন। সে তার ভুল বুঝতে পেরেছে। ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছে। তারা বাবাও ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি আশা করছেন, সবাই তাকে মাফ করে দিবেন এবং কেউ এমন কিছু করবেন না যাতে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়।