বড়লেখায় টিলাধস ও বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রশাসনের মতবিনিময়
নিজস্ব প্রতিবেদক :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় সা¤প্রতিক টিলাধস ও বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় ও করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (০২ জুলাই) রাতে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে উপজেলা প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ এই সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী। সভায় সভাপতিত্ব করেন বড়লেখা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এপিপি গোপাল দত্ত। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উবায়েদ উল্লাহ খানের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাওলাদার আজিজুল ইসলাম, সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম আব্দুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সাখাওয়াত হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুর রব, মিজানুর রহমান, জালাল আহমদ, তপন কুমার দাস, খলিলুর রহমান, ময়নুল ইসলাম, এজে লাভলু প্রমুখ।
সভায় ইউএনও খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী বলেন, সম্প্রতি ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট বন্যায় জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বড়লেখা উপজেলা। বন্যায় বড়লেখার প্রায় ২০০ গ্রাম প্লাবিত হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে টিলা ধসে অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় শুরু থেকেই উপজেলা প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করছে। প্রথমদিকে বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ২১টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়। পরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আরও ২৯টিসহ মোট ৫০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়। শুরু থেকেই বন্যার্ত পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রি বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
ইউএনও বলেন, বন্যার্তদের মাঝে বিতরণের জন্য ১৮৫ টন চাল বরাদ্দ এসেছে, যা মাননীয় পরিবেশমন্ত্রী মহোদয়ের প্রত্যক্ষ নির্দেশে ও জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিবিড় তত্ত্বাবধানে আমরা পানিবন্দী পরিবারের মধ্যে বিতরণ করেছি। এছাড়া আমাদের কাছে জিআর ক্যাশ এসেছে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এই টাকা দিয়ে আমরা শুকনো খাবারের পাশাপাশি অন্যান্য খাদ্যসামগ্রি বিতরণ করেছি। শিশুখাদ্যের জন্য আমাদের কাছে ৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকা আছে, যা এখনও আমরা ব্যয় করিনি। তিনি বলেন, আগামী ০৭ ও ০৮ জুলাই মাননীয় পরিবেশমন্ত্রী মহোদয় বড়লেখা ও জুড়ী সফরে আসবেন। তখন আমরা শিশুখাদ্য বিতরণ করবো। গো-খাদ্যের জন্য আমাদের কাছে ৩ লাখ টাকা রয়েছে। এছাড়া আমাদের কাছে ৫শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১২ হাজার প্যাকেট ডানো গুঁড়ো দুধ রিজার্ভ আছে। তিনি আরও বলেন, বন্যার পর প্রবাসীদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন ব্যক্তি ও সামাজিক সংগঠন সবাই বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। যে কারণে বন্যার্ত মানুষের খাদ্যের কোনো সংকট তৈরি হয়নি। এরপরও কেউ যদি বাদ পড়ে তাহলে আমাদের জানাবেন আমরা দ্রুত খাদ্যসামগ্রি পৌঁছে দেবো। এছাড়া যারা ৩৩৩ মাধ্যমে আমাদের খাদ্য সহায়তা চেয়েছেন তাদেরকেও আমরা খাদ্য পৌঁছিয়ে দিচ্ছি। তিনি বলেন, বন্যা ও টিলা ধসে অনেক মানুষের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তাদের পুর্নবাসনের লক্ষ্যে সেই তালিকা আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবো।
ইউএনও বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকায় পানিবাহিত রোগ ছড়াচ্ছে। সেসব এলাকায় মেডিক্যাল টিম সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। মানুষের মাঝে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হচ্ছে। বিশুদ্ধ পানির সংকট মেটাতে নলকূপ উঁচুকরণও করা হচ্ছে। এ সময় সাংবাদিকদের করা বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ইউএনও।