বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবার ওয়ার্ডবয়কে মারধর, আটক ১
নিজস্ব প্রতিবেদক :: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সিং ডিউটি রুম থেকে জোরপূর্বক বালিশ নিতে বাঁধা দেয়ায় ওয়ার্ডবয় অনজিৎ চন্দ্র দাসকে মঙ্গলবার সকালে এক রোগীর স্বজনরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওয়ার্ডবয় অনজিৎ চন্দ্র দাস হামলাকারী দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করায় রহিমা বেগম নামের এক মহিলাকে আটক করেছে থানা পুলিশ। তিনি উপজেলার গঙ্গারজল গ্রামের আলতাফ হোসেনের স্ত্রী।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, জনৈক তানভীর আহমদ ও রহিমা বেগম মঙ্গলবার (২৮ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ডলি বেগম নামের এক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওয়ার্ডবয় অনজিৎ চন্দ্র দাসকে কর্তব্যরত স্টাফনার্স ওই রোগীর জন্য বিছানার ছাদর ও বালিশ দিতে বলেন রোগীর স্বজনরা। এরই মধ্যে রোগীর স্বজন তানভীর আহমদ নার্স স্টাফরুমে ঢুকে জোরপূর্বক নিজ হাতে বালিশ নিয়ে আসতে থাকেন। এ সময় ওয়ার্ডবয় তার হাতে বালিশ ফেরত দিতে বলে এবং ডিউটি রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য বলে। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে তানভীর আহমদ ওয়ার্ডবয়কে অশ্লীল ভাষায় গালি-গালাজ, চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এ সময় রোগীর আরেক স্বজন রহিমা বেগমও তাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে তিনি ওয়ার্ডবয়কে জুতাপেটা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রত্নদ্বীপ বিশ্বাস জানান, সিসি ক্যামেরার ফোটেজ অনুযায়ী হাসপাতালে ভর্তির এক মিনিটের মধ্যেই ওয়ার্ডবয় রোগীর বিছানার ছাদর ও বালিশ আনতে যায়। কর্তব্যরত অবস্থায় একজন সরকারি কর্মচারীর ওপর হামলা চালালে ওরা কাজ করবে কিভাবে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
বড়লেখা থানার এসআই আতাউর রহমান জানান, হাসপাতাল কর্মচারীর ওপর হামলায় জড়িত এক মহিলাকে পুলিশ তাৎক্ষণিক আটক করেছে। অপর হামলাকারীকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে লাইন ভেঙ্গে জোরপূর্বক করোনা ভ্যাকসিন নিতে না দেওয়ায় অফিস সহকারী প্রণব চন্দ্র দাসকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। জানা গেছে, উপজেলার নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নের যুবক মাহী ফাইজারের দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে লাইন ছাড়াই বুথে প্রবেশ করে অপেক্ষমানদের পেছনে ফেলে তাকে টিকা দিতে জোর-জবরদস্তি চালায়। এ সময় অফিস সহকারী প্রণব চন্দ্র দাস তাকে লাইনে যেতে অনুরোধ জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাহী অফিস সহকারী, টিকা কার্যক্রমে নিয়োজিতদের গালি-গালাজ করে হাসপাতালের নিচে চলে যায়। প্রায় আধঘণ্টা পর মাহী ৮ যুবককে নিয়ে প্রণব দাসকে হাসপাতালের নিচে নামিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা প্রণব দাসকে তাদের কবল থেকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় আহত হাসপাতাল কর্মচারী বাদী হয়ে ঘটনাকারী মাশরাফি আলম মাহীকে প্রধান ও ৮জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় অভিযোগ দিলেও জড়িত কাউকে আটক করা হয়নি।