বড়লেখার হাওর এলাকায় ডাকাত আতঙ্ক, মসজিদে মসজিদে মাইকিং
নিজস্ব প্রতিবেদক :: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধি পেয়েছে। হাওর এলাকার গ্রামগুলোতে অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাওয়ায় ঘরে রক্ষিত মালামাল চুরি হচ্ছে প্রতিদিনই। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতেও ডাকাত আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটান মানুষজন। বন্যাকবলিত তালিমপুর ও সুজানগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ডাকাত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন এলাকার মসজিদে মাইকিং করা হয়। ডাকাতি প্রতিরোধে এলাকার মানুষজন নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। অনেকে ফেসবুকেও বিষয়টি শেয়ার করে সবাই সতর্ক থাকতে বলেছেন। পুলিশ বলছে, রাতে এসব এলাকায় পুলিশের টহল দল সতর্ক অবস্থায় ছিলো। ডাকাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
ভুক্তভোগী এলাকাবাসী জানান, উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামে শুক্রবার (২৩ জুন) ভোররাত সাড়ে ১২টায় ডাকাত হানা দিয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। একইভাবে সুজানগর ইউনিয়নের কটালপুর গ্রামে ডাকাত হানা দিয়েছে বলে পুলিশের কাছে ফোন যায়। এতে এসব এলাকার মানুষজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই অবস্থায় এসব এলাকার বিভিন্ন মসজিদে মাইকিং করা হয়। অনেকে ফেসবুকেও বিষয়টি শেয়ার করে সতর্ক থাকতে বলেন। ডাকাতি প্রতিরোধে এসব এলাকার মানুষজন রাত জেগে পাহারা দেন।
তালিমপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান পলক নিজের ফেসবুকে আইডিতে লিখেছেন, ‘এই মুহূর্তে তালিমপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের শ্রীরামপুর গ্রামে ডাকাত প্রবেশ করেছে সবাই এগিয়ে আসেন।’
পশ্চিম গগড়া এলাকার বাসিন্দা রিপন দাস বলেন, এমনিতেই বন্যায় পানিবন্দী মানুষ। এর মধ্যে বিদ্যুৎ নাই। বৃষ্টি হলে আতঙ্ক বাড়ে। তার ওপর এলাকায় ডাকাত হানা দিয়েছে বলে বিভিন্ন এলাকার মসজিদে মাইকিং করা হয়েছে। এতে মানুষের মধ্যে নতুন আতঙ্ক যোগ হয়েছে। মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
তালিমপুর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস বলেন, রাতে সাড়ে ১২টায় প্রথমে আমার কাছে শ্রীরামপুর থেকে লিটন বিশ্বাস নামের একজন কল করে বলেছেন যে-এলাকায় ডাকাত ঢুকেছে। পরে একইভাবে পশ্চিম গগড়া থেকে সেলিম আহমদ নামে পরিচিত একজনও কল দিয়েছেন। পরে পাটনা এলাকায় ডাকাত হানা দিয়েছে বলে খবর আসে। ডাকাতি প্রতিরোধে এসব এলাকায় মসজিদেও মাইকিং হয়েছে। মানুষজন আতঙ্কে এলাকায় রাত জেগে পাহারা দিয়েছেন। এর মধ্যে বিদ্যুৎ নাই। ঘুটঘুটে অন্ধকার। এতে ভয়টা আরও বেড়েছে।
তালিমপুর ইউনিয়নে টহলে থাকা এসআই আতাউর রহমান বলেন, আমরা তালিমপুরে টহল ছিলাম। এ রকম কোনো খবর পাইনি। ঘটনা শুনে খোঁজ নিয়েছি। আমরা সতর্ক ছিলাম।
সুজানগর ইউনিয়নে টহলে থাকা এএসআই আব্দুল হালিম বলেন, রাতে আমরা সুজানগর বাজারে ছিলাম। এলাকায় ডাকাত ঢুকেছে বলে কটালপুর থেকে এক লোক ৯৯৯ কল দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছে। পরে ৯৯৯ থেকে আমাকে কল দেওয়া হয়। আমি কটালপুর এলাকার ওই লোকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, ডাকাতরা নাকি নৌকায় এসেছিলো। পরে চলে গেছে। তাকে বলেছি ভয়ের কারণ নেই। আমরা আছি। পরে আমি সুজানগর ইউপি’র বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেম্বারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, তারা জেগে আছেন।