বড়লেখায় ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত : পানিবন্দী শত শত পরিবার
নিজস্ব প্রতিবেদক :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় শনিবার রাত ১০টা থেকে টানা কয়েক ঘণ্টার ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসা-বাড়ি ও দোকানপাটে পানি ওঠেছে। এছাড়া বড়লেখা-মৌলভীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান তলিয়ে যাওয়ায় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন স্থানীয় লোকজন। এদিকে ভারী বর্ষণের কারণে শনিবার রাত থেকে বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে। তবে রোববার সকাল থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে বলে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ভোক্তভোগী স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি প্রবাহের পথ দখল করে নদীনালা, খালবিল ভরাট, অপরিকল্পিতভাবে ভবন, ঘরবাড়ি ও রাস্তা-ঘাট নির্মাণের ফলে পানি প্রবাহের পথ সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া হাকালুকি হাওরে পলি জমে ক্রমেই ভরাট হয়ে পড়ায় পানি উপচে উজানের দিকে ধেয়ে আসছে। এ কারণে ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি দ্রæত নামতে না পেরে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আর একে একে তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। পৌর শহরের গাজিটেকা, আইলাপুর, গ্রামতলা একাংশ, পানিধার একাংশ, উপজেলার হাটবন্দ একাংশসহ একাধিক এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এছাড়া পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার শত শত পরিবার।
সরেজমিনে জানা গেছে, শনিবার রাত দশটা থেকে ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। রোববার সকাল পর্যন্ত টাকা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে কৃষকের সদ্য রোপণকৃত আউশ ধানের ক্ষেত। বড়লেখা-মৌলভীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কের পানিধার ও দক্ষিণভাগ এবং বড়লেখা-শাহবাজপুর সড়কের ডিগ্রি কলেজ এলাকায় সড়কের ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হতে থাকে। কোনো কোনো স্থান ৩-৪ ফুট তলিয়ে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। হাকালুকি হাওরপাড়ের গ্রামগুলোর অধিকাংশ রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এদিকে পৌরসভার যেসব এলাকায় পানি উঠেছে রোববার সকালে সেসব এলাকা পৌরসভার মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী পরিদর্শন করেছেন।
বড়লেখা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শামীম মোল্লা বলেন, শনিবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পানি ফায়ার সার্ভিসের সামনে বড়লেখা-মৌলভীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়ক তলিয়ে যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি কিছুটা নেমে গেলেও পানিবন্দী হয়ে আছেন লোকজন।
পল্লী বিদ্যুতের বড়লেখা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) এমাজ উদ্দিন সরদার বলেন, রাতে ভারী বর্ষণের কারণে বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ ছিলো। তবে সকাল থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে।