বড়লেখায় পরিবারের সাথে থেকে সাজাভোগের ব্যতিক্রমী রায়
নিজস্ব প্রতিবেদক :: মৌলভীবাজারের বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জিয়াউল হক অপরাধ স্বীকার করায় এক আসামীকে শর্তসাপেক্ষে পরিবারের সাথে বসবাস করে সাজাভোগের ব্যতিক্রমী রায় (প্রবেশন) দিয়েছেন।
জানা গেছে, উপজেলার নিউ সমনবাগ চা বাগানের বাবুল রিকমুনের ছেলে অতিশ রিকমুনকে (২৯) গত বছরের ১৮ নভেম্বর ফতেহবাগ চা বাগানের একটি চোলাই মদ তৈরির কারখানা থেকে বিপুল পরিমাণ চোলাই মদের উপকরণ ও মদ তৈরির সরঞ্জামসহ গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। এ ব্যাপারে শাহবাজপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই রতন কুমার হালদার আটক অতিশ রিকমুনকে প্রধান আসামী করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে থানায় মামলা করেন। আদালত আসামীকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। প্রায় দুই মাস জেল খেটে আসামী অতিশ রিকমুন জামিনে মুক্তি পান।
মামলার চার্জ গঠনকালে আসামী অতিশ রিকমুন অপকটে দোষ স্বীকার করে আদালতকে জানায়, সে একজন চা শ্রমিক। তার দু’টি সন্তান রয়েছে। হাজতকালীন সময়ে তারা অনাহারে-অর্ধাহারে জীবন-যাপন করেছে। তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নাই। সে সংশোধন হতে চায়। আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জিয়াউল হক গত বৃহস্পতিবার (১৯ মে) আসামীর বয়স, সাংসারিক অবস্থা, পেশার ধরণ, অপরাধের মাত্রা এবং সহজ-সরল স্বীকারোক্তি বিবেচনায় আসামীকে কারাগারে রেখে সাজা প্রদান না করে দুইজন প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে ১ বছরের সংশোধনমূলক কার্যক্রম সম্পন্ন করার শর্তে পরিবারের সাথে বসবাস করে সাজাভোগের রায় (প্রবেশন) প্রদান করেন।
আদালত রায় ঘোষণার প্রথম মাসে দণ্ডিত আসামীকে চা বাগান ব্যবস্থাপকের নির্দেশিত স্থানে তিন প্রজাতির ৪৫টি ঔষধি বৃক্ষের চারা রোপণ, ১ বছরের মধ্যে কোনো ধরণের অপরাধে না জড়ানোসহ বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন।
বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট গোপাল দত্ত জানান, মাদক মামলায় এক আসামীর বিরুদ্ধে প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে সংশোধনমূলক কার্যক্রম সম্পন্ন করার শর্তে আদালত এক বছরের সাজার রায় ঘোষণা করেছেন।