বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এক বছর পূর্ণ হলো আজ
আব্দুর রব, নিজস্ব প্রতিবেদক :: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলীর বড়লেখায় দায়িত্ব পালনের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ শুক্রবার (২০ মে)। যোগদানের পরের মাসেই হারিয়েছেন সবচেয়ে কাছের মানুষ গর্ভবতী সহধর্মিণীকে। করোনার সাথে প্রায় এক মাস যুদ্ধ করে অবশেষে অনাগত সন্তানসহ তিনি পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। এ শোককে পেছনে ফেলে কর্মস্থল বড়লেখাবাসীকে নিজের পরিবার মনে করে মনোনিবেশ করেন নানা মানবিক ও সরকারি গুরুদায়িত্ব পালনে। অর্পিত সরকারি দায়িত্বের পাশাপাশি সামাজিক ও নানা মানবিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে স্থান করে নিয়েছেন বড়লেখার সর্বস্তরের মানুষের হৃদয়ে।
খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী বড়লেখায় যোগদানের আগে থেকেই শুরু হয় করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ। এ সময়ে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তিনি সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করেন। করোনাকালীন বড়লেখার অসহায় ও দরিদ্র মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন সরকারি খাদ্যসামগ্রি। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বড়লেখা উপজেলায় প্রবাসীদের ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রম সহজতর ও সাশ্রয়ী করার লক্ষ্যে ভ্রাম্যমান যানবাহনের ব্যবস্থা চালু করেন। এর ফলে করোনাকালীন লকডাউনের সময়ে সিলেট ও মৌলভীবাজারে না গিয়েই ঘরে বসে প্রবাসীগণ করোনার টিকার রেজিষ্ট্রেশন সুবিধা পেয়েছেন। সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনের গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে বড়লেখা উপজেলার সকল সংস্কৃতিকর্মী ও ক্রীড়া সংগঠক এবং ক্রীড়ামোদীদের নিয়ে খেলাধুলাসহ জাকজমকপূর্ণ জাতীয় দিবসসমূহ পালনের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে তুলেন। অসহায় ও দরিদ্র সাংস্কৃতিক ব্যক্তি/পরিবারকে সরকারি গৃহ প্রদান ও আর্থিক সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে স্বচ্ছলতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ অফিসার্স ক্লাব পুন:সংস্কারের মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী করায় উপজেলা প্রশাসনের সকল অফিসারের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে এ ক্লাবটি। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত পাকাঘরের গুণগত মান নিশ্চিতকরণসহ সরকারি উন্নয়ন কার্যক্রমসমূহ নিবিড়ভাবে তদারকি করেন। ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারি গৃহ প্রদান ও পিছিয়ে থাকা এই জনগোষ্ঠীকে সকল সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেন।
বিয়ানীবাজার ও জুড়ী উপজেলা হতে বড়লেখা উপজেলার প্রবেশমুখে ‘স্বাগতম’ ভাস্কর্য স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাংলাদেশের বৃহত্তম জলপ্রপাত মাধবকুণ্ড ইকোপার্কের সামনে দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য স্থাপনের মাধ্যমে বড়লেখা উপজেলাকে নান্দনিকভাবে উপস্থাপনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
ইউএনও খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী এক বছরের কর্মকালীন সময়ে বড়লেখা উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, গণমাধ্যমকর্মী, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠক ব্যক্তিবর্গের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করেন। বড়লেখা-জুড়ী সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আলহাজ্ব শাহাব উদ্দিনের দিক- নির্দেশনা প্রতিপালনের মাধ্যমে তিনি পরিবেশ রক্ষায় টিলা কর্তন রোধ, হাকালুকি হাওরের মৎস্য ও পাখি সংরক্ষণ এবং ভ্রমণপিপাসুদের আকৃষ্টকরণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।