ঈদের ছুটি কাটাতে মৌলভীবাজারের পিকনিক স্পটগুলোতে পর্যটকদের ভীড়
নিজস্ব প্রতিবেদক :: পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি কাটাতে পর্যটন জেলা মৌলভীবাজারে ঈদের ছুটিতে দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভীড় করেছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করেই রাত পর্যন্ত ঘোরাঘুরি করছেন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ। তবে সড়কের অবস্থা খারাপ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পর্যটকরা। ঈদের ছুটিতে হাজার হাজার মানুষের পদচারণায় মুখর শ্রীমঙ্গলের বধ্যভূমি ৭১, ফাইভ স্টার হোটেল গ্র্যান্ড সুলতান, জাতীয় উদ্যান লাউয়াছড়াসহ জেলার কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, বড়লেখা উপজেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের আশপাশের এলাকা।
পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, মানুষজন ভীড় করেছেন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। লোক লোকারণ্য যেনো সবক’টি স্পট। ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পিংকী বলেন, আবদ্ধ জীবনের জাল ছিন্ন করে বেড়াতে পেরে আনন্দ লাগছে। দু’দিন আগেই চলে আসি। এখানেই ঈদ উদযাপন করেছি।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে কমলগঞ্জ–শ্রীমঙ্গল সড়ক আর মাধবপুর চা বাগান লেকসহ বিভিন্ন চা বাগানে উপচেপড়া ভীড় পর্যটকদের। একই অবস্থা ধলই চা বাগান, বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ এলাকা, শমসেরনগর চা বাগানের লেক, শমসেরনগর চা বাগান গলফ মাঠ, ফুলবাড়ি চা বাগানসহ বিভিন্ন চা বাগানের পাহাড়ি উঁচু–নিচু এলাকায়।
হবিগঞ্জ থেকে আসা শুভ চৌধুরী বলেন, ঈদের ছুটিতে পরিবার–পরিজন নিয়ে শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে এসেছি। এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো তবে সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
ঢাকা থেকে আসা নারী উদ্যোক্তা শাহিন আক্তার বলেন, এখানে চুরি–ডাকাতি নেই, সমস্যা রাস্তাঘাট। ভঙ্গুর রাস্তার কারণে এখানে আসতে অনেক কষ্ট হয়েছে।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বিট কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ জানান, ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের প্রচণ্ড ভীড় রয়েছে।
মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়া উদ্দিন বলেন, টাইম শিডিউল অনুযায়ী সড়ক মেরামতের কাজ চলছে। ইঞ্জিনিয়ারিং সিস্টেমের বাইরে গিয়ে আসলে আমাদের কিছু করার থাকে না।
এদিকে পর্যটকদের পদচারণায় হোটেল–রিসোর্টগুলোর কক্ষ অগ্রিম ভাড়া হওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন ব্যবসায়ীরা। তারা করোনার মন্দা কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন। সবুজের সান্নিধ্যে ঈদের ছুটি কাটাতে শ্রীমঙ্গলের বিটিআরআই, মাধবপুর লেক, বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক আকর্ষণ করেছে পর্যটকদের চোখ। লাউয়াছড়ায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের দিক–নির্দেশনা, বিনোদন ও নিরাপত্তা দিতে র্যাব ও পর্যটক পুলিশ সেখানে সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক জয়নাল আহমেদ বলেন, ঈদের ছুটি হওয়ার অনেক আগেই অনালাইনে শ্রীমঙ্গলের একটি হোটেলের কক্ষ ভাড়া করে রেখেছিলাম। ছুটি শুরু হতেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখানে আসলাম। সবুজ চায়ের বাগান, টিলা, বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখছি। এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য যে কোনো মানুষকে বিমোহিত করে।
লাউয়াছড়ার টিকেট কালেক্টর শাহিন মিয়া জানান, ঈদের দ্বিতীয় দিন ছিলো বৃষ্টি। তবুও প্রায় নয় হাজার পর্যটক প্রবেশ করেছেন লাউয়াছড়ায়।
গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্ট অ্যান্ড ট্যুরের স্বত্বাধিকারী সেলিম আহমেদ বলেন, ঈদ উপলক্ষে আমাদের রিসোর্টের সব কক্ষ আগামী ১০ মে পর্যন্ত বুকিং রয়েছে। অন্যান্য রিসোর্টেও একই অবস্থা।
ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, আমরা শ্রীমঙ্গল থানার সাথে সমন্বয় করে কাজ করছি। যেহেতু ঈদের ছুটিতে শ্রীমঙ্গলে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকরা এসেছেন। সেহেতু আমরা বিভিন্ন পর্যটন স্পটে পর্যাপ্ত ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন করেছি। সাদা পোশাকেও পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। পর্যটকরা যেনো নির্বিঘ্নে ঘুরতে পারেন, ভালোভাবে বাড়ি ফিরতে পারেন, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।