বড়লেখার বর্ণিতে অগ্নিকাণ্ডে ৬টি দোকান পুড়ে ছাই
নিজস্ব প্রতিবেদক :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় আগুন লেগে সেমিপাকা ৬টি দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। শুক্রবার (২২ এপ্রিল) সকাল আনুমানিক ছয়টার দিকে উপজেলার বর্ণি ইউপি’র কাজিরবন্দ বাজারের ফজলুর রহমান মার্কেটে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। আগুনে ছয়টি দোকানের মালামাল, নগদ টাকা ও গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন। শুক্রবার দুপুরে খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকানগুলো হচ্ছে-জামিল বস্ত্রবিতান, জামিল ভেরাইটিজ স্টোর ও জামিল পার্টস, বাবুল ভেরাইটিজ স্টোর, আলভি ভেরাইটিজ স্টোর ও সালাম ভেরাইটিজ স্টোর। এদিকে ৫নং ওয়ার্ডের কাজিরবন্দ গ্রামের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী। এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ৩০০ কেজি চাল বিতরণ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ফজলুর রহমান মার্কেটের দোকানপাট বন্ধ রেখে ব্যবসায়ী বাড়িতে চলে যান। শুক্রবা সকাল ছয়টার দিকে মার্কেট থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে স্থানীয় লোকজন মার্কেটের ব্যবসায়ীদের খবর দেন। এ সময় কয়েকটি দোকানে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়। স্থানীয়রা এলাকার মসজিদে মাইকিং করে আগুন লাগার বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসেও খবর দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এর আগেই আগুনে সেমিপাকা ছয়টি দোকানের মালামাল, নগদ টাকা ও গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
জামিল বস্ত্রবিতান, জামিল ভেরাইটিজ স্টোর ও জামিল পার্টসের স্বত্তাধিকারী নূর হোসেন জানান, রাতে সেহরি খেয়ে ফজরের নামাজ পড়ে বাড়িতে ঘুমিয়েছিলাম। সকাল ছয়টার দিকে এলাকার মসজিদে দোকানে আগুন লাগার খবর পেয়ে দ্রুত গিয়ে দেখি আগুনে জ্বলছে। তিনটি দোকান পুড়ে আমার প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কীভাবে আগুন লেগেছে তা জানি না। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
বাবুল ভেরাইটিজ স্টোরের স্বত্তাধিকারী বাবুল আহমদ জানান, আগুনে আমার সব পুড়ে গেছে। এখন আমরা নি:স্ব। আগুনে দোকান পুড়ে আমার প্রায় ১৬ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আলভি ভেরাইটিজ স্টোরের স্বত্তাধিকারী খালেদ আহমদ জানান, দোকানটি তিলে তিলে গড়েছি। কিন্তু সর্বনাশা আগুন সব কেড়ে নিয়েছে। আগুনে দোকান পুড়ে আমার প্রায় ৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বর্ণি ইউপি’র ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান বলেন, ব্যবসায়ীরা মধ্যরাতে দোকান লাগিয়ে সেহরি খেয়ে ঘুমান। আনুমানিক সকাল ছয়টার দিকে আগুন লেগেছে। ছয়টি দোকান পুড়ে ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
বড়লেখা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা শামীম মোল্লা বলেন, মার্কেটের সেমিপাকা ছয়টি দোকান আগুনে পুড়ে গেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। তদন্ত ছাড়া আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা সম্ভব হচ্ছে না।