জুড়ীতে চা শ্রমিকদের সরকারি বরাদ্দের ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ
নিজস্ব প্রতিবেদক, জুড়ী :: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে গত কয়েক বছর থেকে সরকার চা শ্রমিকদেরকে এককালীন প্রতি শ্রমিককে ৫ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরে জুড়ী উপজেলার এলবিন টিলা চা বাগানের তালিকাভূক্ত ১৮৫ জন শ্রমিকের নাম অর্ন্তভূক্ত করা হয়। জুড়ী উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকতারা চা বাগানের উপস্থিত হয়ে বরাদ্দকৃত অর্থের চেক বিতরণ করেন। বনমালী ব্যানার্জী, আলতা ব্যানার্জী, বগলু ব্যানার্জী, বিজলী ব্যানার্জী, হরি ব্যানার্জীসহ ৮জন শ্রমিক উপস্থিত না থাকায় বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি হরগবিন্দ গোস্বামীর অনুরোধে সমাজসেবা কর্মকর্তা ৮ জন চা শ্রমিকের চেক পঞ্চায়েদ সভাপতিকে হস্তান্তর করেন। চেকগুলো শ্রমিকদের হাতে পৌঁছে দেয়ার কথা থাকলেও পঞ্চায়েত সভাপতি তা করেননি। এ নিয়ে কয়েকবার সালিশ বৈঠক করেও শ্রমিকরা চেক ফেরত পাননি। গত ৪ মার্চ বনমালী ব্যানার্জীসহ ৮ জন শ্রমিক পঞ্চায়েত সভাপতি হরগবিন্দ গোস্বামীর বাড়িতে গিয়ে বরাদ্দকৃত অর্থের চেক ফেরত চান। তখন পঞ্চায়েত সভাপতি শ্রমিকদের চেক ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। ওইদিন রাত ১০টায় পঞ্চায়েত সভাপতির নেতৃত্বে সাজু গোস্বামী, বিদ্যুৎ গোস্বামী, রামু গোস্বামীসহ ৮/১০জনের একটি দল দা, লাঠিসোটা নিয়ে বনমালী ব্যানার্জীর বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা বাড়ির লোকজনকে মারধর ও ভাংচুর চালায়। স্থানীয়দের সহায়তায় আহত বনমালী ব্যানার্জীর স্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় মমতা ব্যানার্জী বাদী হয়ে জুড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
জানা গেছে, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের তালিকায় নাম তালিকাভূক্ত করার জন্য পঞ্চায়েত সভাপতি হরগবিন্দ গোস্বামী প্রায় ৩০০ চা শ্রমিকের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। কিন্তু লিস্টে এসেছে মাত্র ১৮৫ জন শ্রমিকের নাম।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগক করলে পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি হরগবিন্দ গোস্বামী বলেন, যে ৮ জন শ্রমিক চেক না পাওয়ার অভিযোগ করেছে তা সত্য নয়। যথাসময়ে তাদের চেক পৌঁছে দিয়েছি।
জুড়ী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুমন দেবনাথ বলেন, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের এককালীন অর্থের চেক আমাদের অফিসের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ৮জন শ্রমিক অনুপস্থিত থাকায় চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতির অনুরোধে চেকগুলো তার কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তিনি জানতে পারেন চেকগুলো শ্রমিকরা পাননি। তদন্তসাপেক্ষে পঞ্চায়েত সভাপতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।